ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২ : ভেজাল ওষুধ তৈরির কারখানার মালিকসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের নকল ওষুধ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো পাইকারি বিক্রেতা মো. আলী আক্কাস শেখ ও ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস এর মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, আয়ুর্বেদিক ওষুধ কারখানার আড়ালে নামি-দামি ব্রান্ডের নকল অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করতো চক্রটি। মূলত আটা-ময়দা, ক্ষতিকর রং আর কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হয় এসব ওষুধ। চুয়াডাঙ্গায় তৈরির পর এটি ছড়িয়ে দেয়া হয় সারা দেশে। চার বছর ধরে এ কাজে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
বুধবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গার দর্শণা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার ও নকল ঔষধ উদ্ধার করে ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতায়ালী জোনাল টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চকবাজারের মদিনা চাঁন সরদার কোল্ড স্টোরেজের এ.জে.আর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি (কুরিয়ার সার্ভিস) থেকে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ পিস পেনটোনিক্স ২০ ট্যাবলেট ও ১৮ হাজার পিস মোনাস ১০ ট্যাবলেট উদ্ধার করে। যার গায়ে যথাক্রমে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ, দ্য একমি ল্যাবোরেটরিজ লিমিটেডের নাম লেখা রয়েছে।
সেখানে থাকা পাইকারি বিক্রেতা মো. আলী আক্কাস শেখকে উদ্ধারকৃত ওষুধের কাগজপত্র দেখাতে বললে সে বৈধ কোন কাগজ দেখাতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় নকল ওষুধের মূল মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় তার নকল ওষুধ তৈরির একটি কারখানা আছে। পরবর্তীতে তাকে নিয়ে ফকিরাপুলের আরামবাগ থেকে গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শণা থানার পৌরসভার একটি বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস নামে আয়ুর্বেদিক ব্যবসার আড়ালে নকল পেনটোনিক্স ২০ ট্যাবলেট ও মোনাস ১০ ট্যাবলেটসহ আরো অন্যান্য ব্র্যান্ডের ঔষধ উৎপাদন করতেন। এসব নকল ঔষধ মূল ডিলার মো. আলী আক্কাস শেখ ও সিন্ডিকেট এর অন্যান্য সদস্যদের দিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিত।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এই সকল ওষুধে কার্যকরী কোন উপাদান থাকে না। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনী, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং শ্বাসতন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। রমজান ও তৎপরবর্তী ঈদকে কেন্দ্র করে এসব ভন্ড প্রতারকদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। তাদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির চকবাজার থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।