ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),প্রতিনিধি,০১ ডিসেম্বর : ‘দেড় বছরের শিশু কন্যা ও স্ত্রীকে রেখে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিই। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে সুন্দরবন অঞ্চলে মেজর জিয়াউদ্দীনের নেতৃত্বে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারিনি। ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, শুধু চাই সম্মান।’
কথাগুলো বলছিলেন বাগেরহাট শহরের সরুই এলাকার রাজ মিস্ত্রী গোলাম মোস্তফা মোল্লা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শেষ বয়সে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে কঠিন সময় পার করছি। আজ পয়লা ডিসেম্বর, বিজয়ের মাস শুরু। এ বিজয় ছিনিয়ে আনতে যুদ্ধে অংশ নিয়েও প্রাপ্য স্বীকৃতিটুকু মেলেনি আটচল্লিশ বছরেও।’
গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ছোট থেকেই রাজ মিস্ত্রীর কাজে যুক্ত ছিলাম। লেখাপড়া তেমন করতে পারেনি। ১৯৬৮ সালে পিরোজপুরে কালিকাঠী গ্রামের নাসরিনের সঙ্গে বিয়ে হয়। কন্যা রেক্সোনার জন্ম হয়। এরই মধ্যে ডাক আসে যুদ্ধের। স্ত্রী-শিশু সন্তান ফেলে চলে যাই ভারতে। বিহারে বীরভূম চাকুলিয়া কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসি দেশে। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন রায়েন্দা এলাকায় মেজর জিয়াউদ্দীনের নেতৃত্বে পাক হানাদারদের মুখোমুখি একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। ৩০ জন রাজাকার আমাদের হাতে নিশ্চিহ্ন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন ঘোষণা হলে পিরোজপুর টাউন বিদ্যালয়ের মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র জমা দিই। ২০০০ সাল থেকে একাধিকবার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করার জন্য বিভিন্ন জনের কাছে ঘুরেও শেষ পর্যন্ত নাম লেখাতে পারলাম না। বর্তমানে অসুখ-বিসুখে জর্জরিত হয়ে আছি। চলাফেরা করতে কষ্ট হয়, অনেক স্মৃতিই ভুলে গেছি।’