বাবা-মেয়ের আত্মহত্যা: ইউপি সদস্য আবুল হোসেন রিমান্ডে

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,গাজীপুর প্রতিনিধি,০২ মে ২০১৭ :  জেলার শ্রীপুরে বাবা-মেয়ে ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাদানকারী হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবুল হোসেনকে দুদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গত সোমবার ঢাকার বিচারিক হাকিম তাওহিদ আল আজাদ এ আদেশ দেন।

এর আগে, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ঢাকার রেলওয়ে (জিআরপি) থানায় মামলাটি করেন আত্মহত্যাকারী হজরত আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আনোয়ার কবির বাবুল জানান, ঢাকার রেলওয়ে থানার পুলিশ আসামি আবুল হোসেনকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন।

বাবা-মেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় গতকাল দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সবুর ঘটনাস্থল ও রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক জানান, বাবা-মেয়ে নিহতের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে কমলাপুর থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ফারুক নামের এক বখাটে যুবক প্রায় দুই মাস আগে আয়েশাকে ধর্ষণ করে। থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়া হলে ফারুক ও তার লোকজন হালিমা ও তাঁর স্বামীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন এ ঘটনার বিচারের দায়িত্ব নেন। কিন্তু কোনো মীমাংসা ছাড়াই তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেন। এ ঘটনার পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে শ্রীপুর মডেল থানায় গরু চুরির অভিযোগ করেন হালিমা। এ ঘটনারও মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দায়িত্ব নেন ইউপি সদস্য আবুল হোসেন। কিন্তু এবারও তিনি কোনো সমাধান করেননি। হজরত আলী এ ঘটনার বিচারের জন্য তাগাদা দিলে এতে দুর্বৃত্তরা হালিমা ও তাঁর স্বামীর ওপর আরো বেশি ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে তারা মারধর করার জন্য দা-লাঠি নিয়ে শুক্রবার দিনভর হজরতকে খোঁজাখুঁজি করে এবং হুমকি দেয়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকালে শ্রীপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে আউটার সিগন্যালে শিশু নির্যাতন এবং গরু চুরির বিচার না পেয়ে হজরত আলী ও তার পালিত মেয়ে আয়েশা আক্তার ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শ্রীপুর রেলগেট এলাকার এন এন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কাছে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। শিশু মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পরও বিচার না পাওয়ায় এবং নির্যাতনের শিকার হওয়ায় বাবা-মেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পরিবার অভিযোগ করেছে।